প্রধানমন্ত্রীর সাথে চিটাগাং চেম্বারের বোর্ড অব ডাইরেক্টর্স’র সাক্ষাত ঃ অক্টোবরের শুরুতে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার উদ্বোধনের আশ্বাস
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে তাঁর কার্যালয়ে ২২ আগস্ট সকালে দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি’র নব-নির্বাচিত পরিচালকমন্ডলী সাক্ষাত করে চেম্বার নির্মিত দেশের প্রথম ও একমাত্র ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার উদ্বোধনের আমন্ত্রণ জানান। আমন্ত্রণ গ্রহণ করে শেখ হাসিনা অক্টোবর’র শুরুতে এ সেন্টার উদ্বোধনের আশ্বাস প্রদান করেন। নবনির্বাচিত চেম্বার নেতৃবৃন্দকে অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন-আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়ম-নীতি মেনে যেভাবে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পেরেছেন তা অতীতে কেউ কখনো করতে পারেনি। চট্টগ্রামকে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র উল্লেখ করে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার নির্মাণের মাধ্যমে চিটাগাং চেম্বার চমৎকার কাজ করেছে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন এবং পরিচালকমন্ডলীকে অভিনন্দন জানান। তিনি ডিসপ্লে সেন্টারসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি একটি ডাটা বেইজ তৈরীর পরামর্শ দেন যাতে করে বিদেশী বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে আকৃষ্ট হয় এবং সহজে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। গ্যাস ও বিদ্যুতের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী বলেন-গত মেয়াদে তাঁর সরকার প্রচুর কাজ করলেও পরবর্তী সরকারের আমলে এ খাত দেউলিয়া হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী বর্তমান সরকারের ৪ বছর ৮ মাসের উন্নয়নের খতিয়ান দিয়ে খাদ্য উৎপাদন ও সংরক্ষণে সাইলো ও গুদাম নির্মাণ, তিনটি কৃষি কলেজ স্থাপনসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা বর্ণনা করেন এবং রমজানে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য ব্যবসায়ী সমাজকে ধন্যবাদ জানান। দেশের রপ্তানি বৃদ্ধির লক্ষ্যে হালাল মাংসসহ পণ্য বহুমূখী করণের উপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী পাট থেকে রপ্তানিযোগ্য ৩৫টি পণ্য উৎপাদন সম্ভব বলে মত প্রকাশ করেন। দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে দক্ষিণ চট্টগ্রামের গহিরাতে বিশেষায়িত শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও তিনি প্রতিনিধিদলকে জানান।
চট্টগ্রাম-১০ আসনের সংসদ সদস্য ও চেম্বারের প্রাক্তন সভাপতি এম. এ. লতিফ সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে বন্দর ও আগ্রাবাদস্থ মহেশখাল এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন ও পরিবেশের উন্নয়নে স্লুইচ গেইট নির্মাণে অর্থ বরাদ্দের দাবী জানানোর প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিকভাবে ২০ কোটি টাকা বরাদ্দের আশ্বাস দেন। তিনি ফেনী নদী এলাকায় বিশেষায়িত ইকোনোমিক জোন স্থাপনের অনুমতি প্রদানসহ চিটাগাং চেম্বারকে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়ার অনুরোধ জানান। বন্দরের শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরি, চিকিৎসা ও আবাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত উল্লেখ করে এম. এ. লতিফ এম.পি. ২২ জন বার্থ অপারেটর চট্টগ্রাম বন্দরকে কুক্ষিগত করে রেখেছে বলে মন্তব্য করেন।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ এবং ওয়ান স্টপ সার্ভিস প্রদানের লক্ষ্যে সিসিসিআই কর্তৃক ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার নির্মাণের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। তিনি কৃষি, বিদ্যুৎ, শিক্ষা, জ্বালানী, তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ খাত উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের সাফল্যের প্রশংসা করেন। মাহবুবুল আলম চট্টগ্রামে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পসমূহের কারণে শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান ও কাঙ্খিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিবিড় তদারকিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লাইনে, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল লাইন ও ডাবল লাইনে উন্নীতকরণসহ চট্টগ্রাম মহানগরীর ফ্লাইওভার, রিংরোড, সড়ক প্রশস্তকরণ কার্যক্রম দ্রুততার সাথে বাস্তবায়নের অনুরোধ জানান এবং চট্টগ্রামস্থ শিল্প কারখানাসমূহে জরুরী ভিত্তিতে গ্যাস সংযোগ প্রদানের জোর দাবী জানান।
চেম্বার সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ নুরুন নেওয়াজ সেলিম একনেকে অনুমোদিত কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে জাতীয় অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে বলে মন্তব্য করেন। তিনি চট্টগ্রামে বন্ধ থাকা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বড় বড় শিল্প কারখানার বিশাল অব্যবহৃত জায়গায় নতুন শিল্প স্থাপন এবং শাহ আমানত বিমান বন্দরের সক্ষমতা শতভাগ ব্যবহারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি ৬% গড় প্রবৃদ্ধি অর্জন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, দারিদ্র বিমোচনসহ অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশ একটি অনুকরণীয় মডেল বলে উল্লেখ করেন।
চেম্বার সহ-সভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মহাসেন মোকাবেলায় চিটাগাং চেম্বারের প্রস্তুতি গ্রহণ, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠির মাঝে আগাম ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ এবং রমজান মাসে ছিন্নমূল মানুষের মাঝে ভর্তুকিমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য বিক্রয়ের বিষয় প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। তিনি কর্ণফুলী থানাকে উপজেলায় উন্নীত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোর দাবী জানান এবং প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস প্রদান করেন। এ সময় চেম্বার পরিচালকবৃন্দ মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম, মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী, মাহফুজুল হক শাহ, এম. এ. মোতালেব, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী (আলমগীর), এ. কে. এম. আক্তার হোসেন, কামাল মোস্তফা চৌধুরী, মোঃ অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন), মাহবুবুল হক চৌধুরী (বাবুর), আনোয়ার শওকত আফসার, মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন চৌধুরী, মোঃ দিদারুল আলম, মোঃ জহুরুল আলম, আলহাজ্ব মোঃ সিরাজুল ইসলাম, মোঃ জাহাঙ্গীর, মোহাম্মদ মোর্শেদ, বেলাল আহমেদ, এম. এ. ছালাম, মোরশেদ আরিফ চৌধুরী, প্রাক্তন পরিচালক মোহাম্মদ হাবিবুল হক, সচিব ওসমান গণি চৌধুরী, সদস্য রকিবুর রহমান (টুটুল), মোঃ আবদুল মান্নান সোহেল, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব শেখ ওয়াহিদুজ্জামান ও প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নং- এল/ভিএম/৫/১৪৪৬ ২২ আগস্ট, ২০১৩ ইং
সকল স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকা, সংবাদ সংস্থা, ইলেকট্রনিক মিডিয়াসমূহ ও রেডিওতে সম্প্রচার/প্রকাশের সবিনয় অনুরোধপূর্বক প্রেরণ করা গেলঃ
(ওসমান গণি চৌধুরী) সচিব |